রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ২৮ ভাদ্র ১৪৩২

হাইটেক পার্ক ও বুয়েটের সমঝোতা

মাদারীপুরকে আধুনিক করতে গড়া ইনস্টিটিউট পুরো দেশকেই আলোকিত করবে

প্রকাশ: ০৩:২৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মাদারীপুরকে আধুনিক করতে গড়া ইনস্টিটিউট পুরো দেশকেই আলোকিত করবে

বায়োটেকনোলজি, ন্যানোটেকনোলজি, নিউরোটেকনোলজি, সাইবার সিকিউরিটি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইন্টারনেট অব রোবটিক্স থিংস, ব্লক চেইন, ডেটা সায়েন্স, হাইপার অটোমেশন, টেকনোলজিক্যাল এথিক্স, বিহেভিয়ার অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো অতি-অতি আধুনিক বিষয় পড়ানোর জন্য ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলো আওয়ামী লীগ সরকার। তবে এটি স্থাপনে বাছাই করা হয় মাদারীপুরের চর এলাকা। ২০২৩ সালে ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তৎকালীন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছিলেন, এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মাদারীপুরকে আধুনিক ও স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়তে চায় সরকার।

তবে আধুনিক যন্ত্র ও প্রযুক্তির সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের, মাদারীপুরের দুর্গম এলাকায় স্থানান্তর প্রশ্নের মুখে দাঁড়ায়। ইনস্টিটিউটের ভবিষ্যত নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে।

এ সমস্যার সমাধানে, বুয়েটের সঙ্গে চুক্তি করলো হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। গেল ১০ সেপ্টেম্বর, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে, এ সমঝোতা হয়। এর আওতায়, ইনস্টিটিউটের প্রাথমিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা হবে বুয়েট ক্যাম্পাসে।

এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিল্প এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মধ্যে ব্যাপক দূরত্ব রয়েছে।  দুই ক্ষেত্রে গবেষণার মধ্যেও আছে বিস্তর ফারাক। যা আন্তর্জাতিক মানের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। এ সমস্যা সমাধানের উপায় হচ্ছে ইনস্টিটিউট অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা এমন জায়গায় হয়েছে যেখানে বড় অর্থনীতির উপস্থিতি নেই, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতার হারও কম। এই বিষয়টিই ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি ইনস্টিটিউটকে মাদারীপুর থেকে ঢাকায় স্থানান্তরে উৎসাহিত করেছে। কেননা চর এলাকায় অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির জন্য দরকারি ছাত্র, শিক্ষক ও গবেষক সহ প্রয়োজনীয়  রিসোর্স মবিলাইজেশন প্রায় অসম্ভব। 

এক্ষেত্রে বুয়েটের আটটি ইনস্টিটিউট, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়াটার ম্যানেজমেন্টে বিভিন্ন সফলতা নজরে আনা হয়েছে। সরকার মনে করে, বুয়েটের তত্ত্বাবধানে রিসোর্স মবিলাইজেশন এবং স্কিল গ্যাপ পূরণের দিক থেকে ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট সফল হবে।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়ার দূরত্ব ঘোচাতে এমন একটি মডালিডি বের করা হবে যেখানে বিদেশফেরত ফ্যালো শিক্ষকরা কোর্স নিতে পারবেন । ইন্ডাস্ট্রির প্রয়োজনীয়তা ও দক্ষতা অনুসারে স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী কোর্স ডিজাইন করা হবে। 

দুই বছরের মধ্যে প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামো শেষ করার লক্ষ্য সরকারের। পরবর্তী দু'বছরে কোর্স এবং একাডেমিক অপারেশনের এক্সিলেন্স আনা হবে। এই চার বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আইসিটি এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকবে।
 
উদ্যোগটি সময়োপযোগী এবং যৌক্তিক, এটি বুয়েটের জন্য একটি বড় সুযোগ বলে উল্লেখ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেন, ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিগুলো নিজেই পরিবর্তনশীল। আজ যা ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, ৫ বছর পরে তা নাও থাকতে পারে। তাই এধরণের স্কিল সেটের জন্য বাজারবান্ধব ডায়নামিক এবং ফ্লেজিবল প্রতিষ্ঠান দরকার।

এ সম্পর্কিত খবর
আরও পড়ুন