শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

| ২ কার্তিক ১৪৩২

অস্বাভাবিক কম দামে সিম বিক্রির অভিযোগ

গ্রামীণফোন সম্পর্কিত শুনানি প্রতিযোগিতা কমিশনেই থাকছে

আইরিন খাতুন, ঢাকা

প্রকাশ: ১৭:০৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:১২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গ্রামীণফোন সম্পর্কিত শুনানি প্রতিযোগিতা কমিশনেই থাকছে

ছবি: বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক কম দামে সিম বিক্রি সম্পর্কিত অভিযোগের অনুসন্ধান ও শুনানি কার্যক্রম প্রতিযোগিতা কমিশনের অধীনেই থাকছে। সোমবার সকালে রাজধানীর ইস্কাটনে প্রতিযোগিতা কমিশন কার্যালয়ে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন কমিশনের চেয়ারপার্সন এ এইচ এম আহসান। প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সনের নেতৃত্বে শুনানিতে অংশ নেন কমিশনের আরও তিন সদস্য।

প্রতিযোগিতা কমিশনের আদেশে বলা হয়, আইন অনুযায়ী প্রতিযোগিতা লঙ্ঘনের অভিযোগ খতিয়ে দেখার বিষয়টি প্রতিযোগিতা কমিশনের এখতিয়ারে পড়ে। এটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) বিষয় নয়। বিটিআরসি টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে ভূমিকা পালন করবে, আর প্রতিযোগিতা কমিশন আইন অনুযায়ী বাজার প্রতিযোগিতাবিরোধী প্রভাব দূর করতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে অস্বাভাবিক কম দামে সিম বিক্রি করে বাজার দখলের অভিযোগ আনে অপর দুই মোবাইল অপারেটর রবি এবং বাংলালিংক। এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রতিযোগিতা কমিশন শুনানি শুরু করে। এ সময় শুনানির জন্য সময় চায় বাংলালিংক।

শুনানিতে গ্রামীণফোনের পক্ষে ব্যারিস্টার শরীফ আহমেদ এ অভিযোগের অনুসন্ধান ও শুনানি বা বিচারিক প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতা কমিশনের অধীনে থাকা নিয়ে আপত্তি জানান। তিনি যুক্তি দেন, এ অভিযোগ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির আওতায় পড়া উচিত। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার কমিশন জানায়, অভিযোগটির শুনানি প্রক্রিয়া প্রতিযোগিতা কমিশনের এখতিয়ারেই থাকবে।

সোমবার এক বিবৃতিতে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘বাজার প্রতিযোগিতা ব্যবস্থার অপব্যবহার এবং প্রতিযোগিতা-বিরোধী অনুশীলনের অভিযোগের তদন্ত যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে প্রতিযোগিতা কমিশনের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। এটি বাজারে সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এটি উদ্ভাবন, ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা এবং সামগ্রিকভাবে শিল্পের বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। আমরা কমিশনকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা জোরদার করে এমন নীতি ও অনুশীলনের পক্ষে সমর্থন অব্যাহত রাখব।’

এদিকে গ্রামীণফোন জানায়, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে, প্রতিযোগিতা কমিশনের একটি আদেশ জারি হয়েছে। তবে আমরা এখনও আদেশের কোনো প্রত্যয়িত অনুলিপি পাইনি, তাই এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত মন্তব্য করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও আমরা দৃঢ়ভাবে আবারও বলতে চাই, গ্রামীণফোন বাংলাদেশের প্রচলিত প্রতিযোগিতা আইন মেনে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। গ্রামীণফোন কোনোভাবেই প্রতিযোগিতাবিরোধী কার্যকলাপে সম্পৃক্ত নয়। মূল্য নির্ধারণ, বিপণন এবং বিতরণ সম্পর্কিত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।’

অপারেটরটি জানায়, ‘দেশের টেলিযোগাযোগ খাত বিটিআরসি কর্তৃক কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। ২০০১ সালের বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী পরিচালিত এই খাত ন্যায্য প্রতিযোগিতা, উন্মুক্ত বাজার এবং গ্রাহকের অধিকার নিশ্চিত করে। বিটিআরসি একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাজারে প্রবেশ, মূল্য নির্ধারণ এবং সব প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমের তদারকি করে থাকে। গ্রামীণফোন বর্তমানে একটি এসএমপি অপারেটর হিসেবে আইনানুগভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা অসম এমএনপি লক-ইন, ক্যাম্পেইন অনুমোদন, ইন্টারকানেকশন চার্জসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ন্ত্রণ নির্দেশনার সুনির্দিষ্ট ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছি। এমন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং নেতিবাচক প্রতিযোগিতামূলক উদ্দেশ্যের প্রতিফলন।’

এ সম্পর্কিত খবর
আরও পড়ুন