জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫
ডেটা সম্পর্কিত অপরাধ জামিনযোগ্য!
টেকস্ক্রল নেটওয়ার্ক
প্রকাশ: ১৭:৪৩, ৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:০২, ৯ অক্টোবর ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অধ্যাদেশটি অনুমোদন করে। ছবি: পিআইডি
কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সরকার সংক্ষুদ্ধতা নিরসন কাউন্সিল গঠন, এর কার্যাবলি ও ক্ষমতা সম্পর্কে বিধান করবে বলে জানিয়েছেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ক্রমবিকাশমান প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার সাথে সামঞ্জস্য বিধান ও নাগরিক সেবার সহজ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সরকারের এই উদ্যোগ। এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাবিত জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ,২০২৫ পাস হয়।
তবে, প্রস্তাবিত জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর বিধান মতে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের, বিচারার্থে গ্রহণ ও দণ্ড আরোপ করা গেলেও এই অধ্যাদেশের অধীন অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য ও জামিনযোগ্য হবে।
অধ্যাদেশের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা ও আন্তঃপরিচালনের নীতিগত ও প্রযুক্তিগত কাঠামো গঠন, ব্যক্তিগত উপাত্ত স্বেচ্ছায় প্রক্রিয়াকরণ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা, উদ্দেশ্যের নিরিখে উপাত্তের আইন সম্মত ব্যবহার এর অন্যতম উদ্ধেশ্য।
ব্যক্তিগত উপাত্তের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা করে এর মজুদ, সংরক্ষণ, স্থানান্তর ইত্যাদি কার্যসম্পাদনে ও দায়িত্ব পালনে আইনি বিধানের লঙ্ঘন বা বিচ্যুতির ক্ষেত্রে প্রতিকার এবং সরকারি-বেসরকারি, দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মাঝে আইনানুগভাবে ব্যক্তিগত উপাত্ত বা অন্য কোনো উপাত্ত পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে আন্তঃপরিচালন নিশ্চিতকরণ ও পূর্ববর্ণিত উদ্দেশ্যসমূহ সাধনে সংশ্লিষ্ট সবার ঐক্যবদ্ধ সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় পৃথক এই আইনি কাঠামো।
জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর ৬৮টি ধারা। এর মধ্যে ব্যক্তিগত উপাত্তের আইনানুগ প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবহার এবং উপাত্তধারীর অধিকার নিশ্চিতকরণ অন্যতম। তাছাড়া সরকারি-বেসরকারি ও দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্যক্তিগত উপাত্তের আইনানুগ আন্তঃপরিচালন নিশ্চিতকরণ করারও আইনি ভিত্তি এই অধ্যাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টাকে চেয়ারম্যান করে একটি নীতি-নির্ধারণী বোর্ড গঠনের বিধান রেখে পাস হওয়া এই অধ্যাদেশের অধীনে জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে। এটি হবে, স্বাধীন ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ।কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচ সদস্যের বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি গঠন করার বাধ্যবাধকতা থাকবে।
আন্তঃপরিচালন নিশ্চিতকরণে ‘বাংলাদেশ জাতীয় উপাত্ত ও আন্তঃপরিচালন স্থাপত্য এবং জাতীয় দায়িত্বশীল উপাত্ত বিনিময় প্ল্যাটফর্মের নকশা, প্রতিষ্ঠা, প্রস্তুত, বাস্তবায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের বিধানওে যুক্ত করা হয়েছে।
সরকারি সফটওয়্যার কোড সংরক্ষণ, শেয়ারিং ও সিকিউরিটি প্রটোকল নির্ধারণের জন্য জাতীয় কোড রিপ্রেজেন্টরি এবং তথ্য প্রবাহ ও সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন করতে সেক্টরাল ইন্টারঅপারেবিলিটি স্তর থাকেবে।
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করে ডাটা বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্দেশ্যে এআই ভিত্তিক ডাটা এনালিটিক্স ক্ষমতায়নের বিধানও থাককে। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বা সংক্ষুদ্ধতার দ্রুত নিরসনে গঠিত হবে সংক্ষুদ্ধতা নিরসন কাউন্সিল গঠন।
সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাসমূহে এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার ও আইটি অবকাঠামোর নিরাপদ ও মানসম্মত ব্যবহারের নির্দেশিকা প্রণয়নের বিধান রেখে, আন্তঃপরিচালনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের দায়িত্ববলি সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের কাছে উপাত্তধারীর লিখিত অভিযোগের বিধান রেখে তা লঙ্ঘনের জন্য প্রশাসনিক জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের বিধান রাখা হয়েছে এই অধ্যাদেশে।